ঢাকা,মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪

ঈদগাঁওতে কোরআন শিক্ষার মক্তব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিশুরা!

সেলিম উদ্দীন, ঈদগাঁও, কক্সবাজার প্রতিনিধি, কক্সবাজার সদরের ঈদগাঁও থেকে হারিয়ে যাচ্ছে কোরআন শিক্ষার মক্তব। আগের মত এখন আর কঁচিকাঁচা শিশুদের কোরআন শিক্ষার জন্য মক্তব ফোরকানিয়ায় যেতে দেখা যায় না। কালিমা আর আলিফ, বা, তা এর শব্দে মুখরিত হয়ে উঠে না জনপদ। প্রতিটি মুসলিম জাতিকে ধর্মীয় শিক্ষা দিতে ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে মসজিদ ভিত্তিক শিশু ও গণ শিক্ষা চালু করেন। বর্তমানে বৃহত্তর কিছু কিছু ইউনিয়নে এমন ফাউন্ডেশন রয়েছে।

খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে, এক সময় গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য ছিল কোরআন শুদ্ধ করে জানে এমন একটি মেয়েই হবে ঘরনী। যাতে বাড়ি ঘর কোরআনের শব্দে বরকতময় হয়ে উঠে। এখন সেই ঐতিহ্য হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম থেকে। মক্তব মূলত আরবি শব্দ। এর শাব্দিক অর্থ পাঠশালা বা বিদ্যালয়। শিশুদের কোরআন শিক্ষার এবং ইসলাম সম্পর্কে প্রাথমিক মৌল জ্ঞানার্জনের উত্তম শিক্ষা কেন্দ্র হলো কোরআনি মক্তব। এখান থেকে শিশুরা কোরআনের তেলাওয়াত শেখার পাশাপাশি নামাজ-রোজার নিয়ম কানুন, জরুরি মাসআলা-মাসায়িল, দোয়া-কালাম ইত্যাদি শিখতে পারে। কিন্তু এমন পাঠশালা থেকে এখন আর অবধারিত রোজ সকালে কোরআনের আওয়াজ কঁচিকাঁচা শিশুদের কন্ঠ থেকে বের হয়না। শিশুদের অভিবাবকদের অবহেলার কারনে মসজিদের ইমাম সাহেবরা এখন মক্তবে কোরআন পড়ানোর আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। যার কারনে এলাকার শিশু কিশোররা কোরআন শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

ঈদগাঁও’র বেশ কটি গ্রাম এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, কোথাও কোথাও মক্তবগুলো রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে এমনিতেই বন্ধ হয়ে গেছে। আবার কোথাও কোথাও যাও চালু আছে, সেগুলোতেও আগের মতো জৌলুস নেই। শিশুদের উপস্থিতি নেই বললেই চলে। নামে মাত্র চলে এসব কোরআন শিক্ষার পাঠশালা।

স্থানীয় কজন ইমাম সাহেবের সাথে মক্তবের বিষয়ে জানতে চাইলে তারা বলেন, বিভিন্ন অযুহাত দেখিয়ে এখন অভিভাবকেরা কঁচিকাঁচা শিশুদের মক্তবে পাঠাতে চান না। বেশিরভাগ শিশুরা সকালে ঘুম থেকে উঠেই স্কুলে কোচিং অথবা কিন্ডার গার্টেনে ক্লাসের সময় হয়ে যায়। এভাবে চলতে থাকলে ইসলামী বুনিয়াদি শিক্ষার এ অবারিত ও ঐতিহ্যগত প্রতিষ্ঠান চিরতরে হারিয়ে যেতে পারে। পরিণত হতে পারে অতীত ইতিহাস। কালের পরিবর্তনে মক্তব হারিয়ে গেলেও পোকখালী, ইসলামপুর, ইসলামাবাদ, চৌফলদন্ডীতে এখনো কিছু মক্তব চোখে পড়ে। তবে নানা অযুহাত দেখিয়ে এখন অভিভাবকেরা কঁচিকাঁচা শিশুদের মক্তবে পাঠাতে চান না বলে জানা গেছে।

দেশের প্রতিটি মুসলিম জাতিকে ধর্মীয় শিক্ষা দিতে ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে মসজিদ ভিত্তিক শিশু ও গণ শিক্ষা চালু করেন। বর্তমানে সদর উপজেলার কিছু কিছু ইউনিয়নে এমন ফাউন্ডেশন রয়েছে। যদিও তিন স্তরে, অর্থাৎ প্রাক প্রাথমিক, বয়স্ক ও কুরআন শিক্ষা চালু করলেও কিছু কিছু শিশুরা এই ফাউন্ডেশনে পড়তে আসে। সেই অনুসারে সরকারীভাবে চলে প্রত্যন্ত অঞ্চলের মসজিদ ভিত্তিক শিশু ও গণ শিক্ষা।

জানতে চাইলে মক্তব সংশ্লিষ্টরা জানান, বর্তমানে মক্তব কার্যক্রম প্রায় বিলুপ্তির পথে। অনিয়ন্ত্রিত বিভিন্ন কিন্ডার গার্টেন এ শিশুদের শিক্ষাদানের কারনে মক্তব হারিয়ে যাওয়ার একমাত্র কারন বলে তারা দাবী করেন।

পাঠকের মতামত: